সোমবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
সোমবার EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের মিশ্র মুভমেন্ট পরিলক্ষিত হয়েছে। প্রথমে মূল্য কিছুটা হ্রাস পায়, এরপর আবার বৃদ্ধি পায়, এবং পরে আরও উল্লেখযোগ্য হ্রাস দেখা যায়। কোনো মৌলিক বা সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট ছাড়াই এই পেয়ারের মূল্যের এই ওঠানামাগুলো ঘটেছে। এটি মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে, সর্বদা সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের ফলাফল বা গুরুত্বপূর্ণ নীতিনির্ধারকদের বক্তব্যের প্রভাবে টেকনিক্যাল কারেকশনে হয় না। বর্তমানে, মার্কেটে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রভাব ফেলছে, যিনি নিয়মিতভাবে বিভিন্ন খবরের শিরোনাম হচ্ছেন। তবে, ট্রেডাররা কীভাবে এই খবরগুলোর প্রতিক্রিয়া দেখাবে তা অনুমান করা কঠিন, কারণ ট্রাম্প একদিনে দুইটি বিপরীতমুখী সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। তাই, শুধুমাত্র মৌলিক প্রেক্ষাপটের উপর ভিত্তি করে পূর্বাভাস দেওয়া এখন খুব একটা কার্যকর হবে না। বরং চলমান কারেকশন এবং টেকনিক্যাল বিশ্লেষণের দিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত।
কারেকশনটি উর্ধ্বমুখী ট্রেন্ডলাইনে নির্দেশিত হয়েছে। আগামীকাল FOMC-এর বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকায় চলমান প্রবণতার পরিবর্তন ঘটতে পারে। পাশাপাশি, বৃহস্পতিবারের ইসিবির বৈঠক খুবই গুরুত্বপূর্ণ হবে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
5-মিনিটের টাইমফ্রেমে, সোমবার দুটি প্রায় নিখুঁত ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল। ইউরোপীয় সেশনের সময়, মূল্য প্রায় 1.0451 লেভেল থেকে কোনো বিচ্যুতি ছাড়াই রিবাউন্ড করে এবং 1.0526 লেভেল পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। একই লেভেলে আবার রিভার্সাল ঘটে এবং রাতে মূল্য 1.0433-1.0451 রেঞ্জে ফিরে আসে। নতুন ট্রেডাররা এই দুটি ট্রেড থেকে প্রায় 80-100 পিপস লাভ করতে পারত।
মঙ্গলবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, বর্তমানে মধ্যমেয়াদে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা বিরাজ করলেও স্থানীয় পর্যায়ে এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী কারেকশন চলমান রয়েছে। এখনও ইউরোর দরপতনের প্রত্যাশা করা হচ্ছে, কারণ মৌলিক এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এখনও মার্কিন ডলারকে সমর্থন করছে। তবে, আমরা এই উর্ধ্বমুখী কারেকশনের সমাপ্তির জন্য অপেক্ষা করব, যা মূল্য ট্রেন্ডলাইন ব্রেক করে নিচের দিকে গেলে নিশ্চিত হবে।
মঙ্গলবার, এই পেয়ারের দরপতন পুনরায় শুরু হতে পারে কারণ কোনো নিম্নমুখী কারেকশন ছাড়াই মূল্য যথেষ্ট বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে, আজ এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্ট সম্পূর্ণরূপে টেকনিক্যাল কারেকশনের উপর নির্ভর করবে।
5-মিনিটের টাইমফ্রেমে, নিম্নলিখিত লেভেলগুলোতে দৃষ্টি দেওয়া উচিত: 1.0156, 1.0221, 1.0269-1.0277, 1.0334-1.0359, 1.0433-1.0451, 1.0526, 1.0596, 1.0678, 1.0726-1.0733, 1.0797-1.0804, 1.0845-1.0851।
মঙ্গলবার তুলনামূলকভাবে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন হিসেবে মার্কিন ডিউরেবল গুডস অর্ডার সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। এছাড়াও, ক্রিস্টিন লাগার্ডের একটি বক্তৃতা অনুষ্ঠিত হবে; তবে, তার বক্তব্য থেকে কোনো বড় চমকপ্রদ তথ্য পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে না।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (বাউন্স বা লেভেলের ব্রেকথ্রু)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন খোলা হয় (যা টেক প্রফিট শুরু করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ফলস সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যালের গঠন নাও হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) কাছাকাছি লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: মূল্য 15 পিপস উদ্দেশ্যমূলক দিকে যাওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। প্রচলিত প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেটে থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।