চীন, মেক্সিকো এবং কানাডার ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য শুল্ক আরোপের আশঙ্কার কারণে বিটকয়েন এবং ইথেরিয়াম তীব্র দরপতনের সম্মুখীন হয়েছে। এশিয়ান ট্রেডিং সেশনে বিটকয়েনের মূল্য $100,000 থেকে $91,000-এ নেমে এসেছে, আর ইথেরিয়ামের মূল্য $3,000 থেকে হ্রাস পেয়ে $2,100 পর্যন্ত নেমে এসেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেওয়া সিদ্ধান্ত—জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা এবং কানাডা, মেক্সিকো ও চীনের ওপর শুল্ক আরোপ করা—গত এক শতকের মধ্যে একজন মার্কিন প্রেসিডেন্টের সবচেয়ে বড় রক্ষণশীল বাণিজ্য নীতি হিসেবে চিহ্নিত হতে পারে। এই পদক্ষেপের ফলে বিশ্বব্যাপী ভূ-রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে গভীর প্রভাব পড়তে পারে, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার সক্ষমতা ও অর্থনৈতিক শক্তিকে মারাত্মকভাবে দুর্বল করতে পারে। তদ্ব্যতীত, এই রক্ষণশীল নীতিগুলো অন্যান্য দেশগুলোর পাল্টা পদক্ষেপ গ্রহণের সম্ভাবনা বাড়িয়ে তুলছে। উদাহরণস্বরূপ, কানাডা ও মেক্সিকো ইতোমধ্যে মার্কিন পণ্যের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে। এই উত্তেজনার ফলে একটি পূর্ণাঙ্গ বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু হতে পারে, যা সংশ্লিষ্ট সকল দেশের অর্থনীতির জন্য বিধ্বংসী পরিণতি ডেকে আনতে পারে।
এই প্রেক্ষাপটে, ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদ যেমন ক্রিপ্টোকারেন্সি এবং মার্কিন স্টক মার্কেটের দরপতন হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। ইথেরিয়াম সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, একপর্যায়ে ইথেরিয়াম 26% মূল্য হ্রাসের সম্মুখীন হয়েছে।
বিখ্যাত লেখক রবার্ট কিয়োসাকি মনে করেন, স্বর্ণ, রৌপ্য এবং বিটকয়েন (BTC) বিক্রি করা উচিত, কারণ তার ধারণা, এই সম্পদগুলোর মূল্য অদূর ভবিষ্যতে আরও হ্রাস পেতে পারে। তবে, তিনি মানুষকে হতাশ না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন, বরং যাদের কাছে মূলধন রয়েছে, তারা এই পরিস্থিতির সুবিধা নিতে পারে এবং অ্যাসেটের মূল্য নিম্নমুখী থাকা অবস্থায় কেনার মাধ্যমে বিশাল অ্যাসেট অর্জনের সুযোগ পেতে পারে।
কিয়োসাকি জোর দিয়ে বলেছেন যে, ফিন্যান্সিয়াল মার্কেটে অস্থির সময়গুলো বিনিয়োগকারীদের জন্য অনন্য সুযোগ তৈরি করে, যদি তারা ঝুঁকি নিতে প্রস্তুত থাকে এবং দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম হয়। তিনি একটি সক্রিয় কৌশলের পক্ষে, যেখানে আতঙ্ক ও ভয়ের পরিবর্তে বিনিয়োগকারীরা অবমূল্যায়িত সম্পদে মূলধন বিনিয়োগের কথা বিবেচনা করতে পারেন। তার দৃষ্টিতে, প্রতিটি দরপতন কেবল হুমকি নয়, বরং অ্যাসেঁট সংগ্রহের জন্যও একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ। কিয়োসাকি বিশেষভাবে বিটকয়েন এবং অন্যান্য ক্রিপ্টোকারেন্সিগুলোকে সম্ভাব্য মূল্যের সংরক্ষণকারী হিসাবে চিহ্নিত করেছেন।
ভবিষ্যতে, আমি বিটকয়েন এবং ইথেরিয়ামের যেকোনো উল্লেখযোগ্য দরপতনের ওপর ভিত্তি করে আমার কৌশল নির্ধারণ করব, এই প্রত্যাশায় যে মাঝারি-মেয়াদে মার্কেটে বুলিশ প্রবণতা পুনরায় সক্রিয় হবে এবং ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অক্ষুণ্ন থাকবে।
স্বল্প-মেয়াদী ট্রেডিংয়ের কৌশল এবং শর্তাবলী নিচে বর্ণনা করা হয়েছে।
বিটকয়েন
বাই সিগন্যাল
পরিকল্পনা #1: বিটকয়েনের মূল্য $97,500-এর লেভেলে বৃদ্ধির লক্ষ্যে $95,000 এর লেভেলে পৌঁছালে আমি এটি কিনব। মূল্য $97,500 লেভেলের কাছাকাছি পৌঁছালে বিটকয়েনের বাই পজিশন ক্লোজ করব এবং রিবাউন্ডের ক্ষেত্রে বিক্রি করুন। ব্রেকআউটের ক্ষেত্রে এন্ট্রির আগে, নিশ্চিত করুন যে 50-দিনের মুভিং এভারেজ বর্তমানে মূল্যের নিচে রয়েছে এবং অওসাম অসিলেটর পজিটিভ জোনে রয়েছে।
পরিকল্পনা #2: যদি $93,300 লেভেলের ব্রেকআউটের ক্ষেত্রে মার্কেটে কোন প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি না হয়, তাহলে সেই লেভেলে থেকে বিটকয়েন কেনা যেতে পারে এবং মূল্যের $95,000 এবং $97,500-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা যেতে পারে।
সেল সিগন্যাল
পরিকল্পনা #1: বিটকয়েনের মূল্য $89,700-এর লেভেলে দরপতনের লক্ষ্যে $93,300 এর লেভেলে পৌঁছালে আমি বিটকয়েন বিক্রি করব। মূল্য $89,700 লেভেলের কাছাকাছি পৌঁছালে আমি সেল পজিশন ক্লোজ করব এবং রিবাউন্ডের ক্ষেত্রে বিটকয়েন কিনব। বিক্রির আগে নিশ্চিত করুন যে 50-দিনের মুভিং এভারেজ বর্তমানে মূল্যের উপরে রয়েছে এবং অওসাম অসিলেটর নেগেটিভ জোনে রয়েছে।
পরিকল্পনা #2: যদি $95,000 লেভেলের ব্রেকআউটের ক্ষেত্রে মার্কেটে কোন প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি না হয়, তাহলে সেই লেভেল থেকে বিটকয়েন বিক্রি করা যেতে পারে এবং মূল্যের $93,300 এবং $89,700 এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা যেতে পারে।
ইথেরিয়াম
বাই সিগন্যাল
পরিকল্পনা #1: ইথেরিয়ামের মূল্য $2,743-এর লেভেলে বৃদ্ধির লক্ষ্যে $2,588 এর লেভেলে পৌঁছালে আমি এটি কিনব। মূল্য $2,743 লেভেলের কাছাকাছি পৌঁছালে বাই পজিশন ক্লোজ করব এবং রিবাউন্ডের ক্ষেত্রে এটি বিক্রি করব। ব্রেকআউটের ক্ষেত্রে এন্ট্রির আগে, আমি নিশ্চিত করব যে 50-দিনের মুভিং এভারেজ বর্তমানে মূল্যের নিচে রয়েছে এবং অওসাম অসিলেটর পজিটিভ জোনে রয়েছে।
পরিকল্পনা #2: যদি $2,491 লেভেলের ব্রেকআউটের ক্ষেত্রে মার্কেটে কোন প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি না হয়, তাহলে সেই লেভেলে থেকে ইথেরিয়াম কেনা যেতে পারে এবং মূল্য $2,588 এবং $2,743-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা যেতে পারে।
সেল সিগন্যাল
পরিকল্পনা #1: ইথেরিয়ামের মূল্য $2,335-এর লেভেলে দরপতনের লক্ষ্যে $2,491 এর লেভেলে পৌঁছালে আমি ইথেরিয়াম বিক্রি করব। মূল্য $2,335 লেভেলের কাছাকাছি পৌঁছালে আমি সেল পজিশন ক্লোজ করব এবং রিবাউন্ডের ক্ষেত্রে ইথেরিয়াম কিনব। বিক্রির আগে নিশ্চিত করুন যে 50-দিনের মুভিং এভারেজ বর্তমানে মূল্যের উপরে রয়েছে এবং অওসাম অসিলেটর নেগেটিভ জোনে রয়েছে।
পরিকল্পনা #2: যদি $2,588 লেভেলের ব্রেকআউটের ক্ষেত্রে মার্কেটে কোন প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি না হয়, তাহলে সেই লেভেল থেকে ইথেরিয়াম বিক্রি করা যেতে পারে এবং মূল্য $2,491 এবং $2,335 এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা যেতে পারে।